History Question and Answer for Second Unit Test Exam
History Question and Answer for Second Unit Test প্রিয় ছাত্ররা আজকে পশ্চিমবঙ্গের সপ্তম শ্রেণীর ইতিহাস বিষয়ের পরীক্ষায় আসার মত কিছু প্রশ্ন উত্তর দেওয়া হল যা 2ND UNIT TEST পরীক্ষার জন্য খুবই উপযোগী। পরীক্ষায় ভালো ফল করার জন্য এগুলি পড়ে নাও।
গুরুত্বপূর্ণ ইতিহাস প্রশ্নোত্তর : History Question and Answer for Second Unit Test
1.পানিপথের প্রথম যুদ্ধ কবে সংঘটিত হয়েছিল?
উত্তর: ১৫২৬ খ্রিস্টাব্দে।
📌 ব্যাখ্যা: বাবরের নেতৃত্বে মোগল সেনা ও ইব্রাহিম লোদি’র মধ্যে এই যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এটি মুঘল সাম্রাজ্যের সূচনা করে।
2.জাহাঙ্গিরের শাসনকালে কোন শিখ গুরুকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়?
উত্তর: গুরু অর্জুন।
📌 ব্যাখ্যা: গুরু অর্জুন দেব পঞ্চম শিখ গুরু ছিলেন এবং তাঁকে ইসলাম গ্রহণে অস্বীকৃতি জানানোর কারণে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
3.দিল্লি শহর গড়ে উঠেছিল কোন নদীর তীরে?
উত্তর: যমুনা নদী।
📌 ব্যাখ্যা: দিল্লির প্রাচীন সভ্যতা যমুনা নদীর তীরে গড়ে ওঠে, যা আজও ভারতের একটি প্রধান নদী।
4.কিতাব–আল–রিহলা” নামক গ্রন্থের রচয়িতা কে?
উত্তর: ইবন বতুতা।
📌 ব্যাখ্যা: এই বিশ্বখ্যাত মুসলিম পর্যটক তাঁর ভ্রমণ কাহিনি “কিতাব-আল-রিহলা”-য় তুলে ধরেন, যেখানে ভারতসহ বহু দেশের বিবরণ রয়েছে।
5.খলজি বিপ্লব কোন সালে ঘটেছিল?
উত্তর: ১২৯০ খ্রিস্টাব্দে।
📌 ব্যাখ্যা: খলজি রাজবংশের প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দিল্লি সুলতানাতে নতুন শাসনের সূচনা হয়।
6.তৈমুরীয় উত্তরাধিকার নীতি ভেঙে প্রথম অল ভাগ না করে কেন্দ্রীভূত শাসন কায়েম করেন কে?
উত্তর: (D) আকবর।
📌 ব্যাখ্যা: সম্রাট আকবর মুঘল সাম্রাজ্যে একক শাসন প্রতিষ্ঠা করে রাষ্ট্রকে সুসংগঠিত করেন।
7.বারো ভূঁইয়াদের মধ্যে বিশিষ্ট নেতা কে ছিলেন?
উত্তর: (B) ইশা খান।
📌 ব্যাখ্যা: ইশা খান ছিলেন বাংলার একজন প্রভাবশালী জমিদার ও স্বশাসিত নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি যিনি মুঘলদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন।
- দিল্লি শহরের ভিত্তি গড়ে ওঠে কোন নদীর তীরে?
উত্তর: (B) যমুনা নদী।
📌 ব্যাখ্যা: যমুনা নদীর তীরে গড়ে ওঠা দিল্লি ছিল বহু রাজবংশের রাজধানী।
- “আল–রিহলা” বা ভ্রমণকাহিনী লিখেছিলেন কে?
উত্তর: (C) ইবন বতুতা।
📌 ব্যাখ্যা: এই বিখ্যাত ভ্রমণকারীর ভ্রমণবৃত্তান্ত মধ্যযুগীয় বিশ্বের মূল্যবান দলিল।
🔟 শাসন চালিয়েও “সুলতান” উপাধি গ্রহণ করেননি কে?
উত্তর: (C) খিজির খান।
📌 ব্যাখ্যা: খিজির খান দিল্লির সিংহাসনে বসলেও কখনো “সুলতান” উপাধি গ্রহণ করেননি, বরং নিজেকে “রায়ত” (গভর্নর)-রূপে চিহ্নিত করতেন।
History Question and Answer for Second Unit Test
আরও পড়ুন “WB Class 4 Science Chapter 1 for success : পরিবেশের উপাদান ও জীবজগৎ প্রশ্ন ও উত্তর”
এককথায় উত্তর
- নিজামউদ্দিন আউলিয়া কে ছিলেন?
উত্তর: সুফি সাধক - হলদিঘাটের যুদ্ধ কাদের মধ্যে হয়েছিল?
উত্তর: আকবর ও মহারানা প্রতাপ - ‘রুমি’ কৌশল কে ব্যবহার করেছিলেন?
উত্তর: ইলতুতমিশ - আলাউদ্দিন খলজির সেনাপতির নাম কী?
উত্তর: মালিক কাফুর - ভাস্কো–দা–গামা কে ছিলেন?
উত্তর: পর্তুগিজ নাবিক - রাঠোর যুদ্ধ কাদের মধ্যে হয়েছিল?
উত্তর: আকবর ও রাজপুত রাঠোর - বেমানান শব্দ – কিলারাই, পিথোরা, আগ্রা, সিরি, কিলোঘড়ি?
উত্তর: আগ্রা - খলিফা ইলতুতমিশকে কী পাঠিয়েছিলেন?
উত্তর: খিলাত - দুজন মামেলুক সুলতানের নাম?
উত্তর: ইলতুতমিশ ও বালবান - মুঘলরা চট্টগ্রাম বন্দর দখল করে ফরাসিদের তাড়িয়েছিল – ঠিক না ভুল?
উত্তর: ভুল - বক্তিয়ার খলজি কোথাকার শাসক ছিলেন?
উত্তর: লখনৌতি (বাংলা) - ইসলাম জগতের প্রধান শাসকের উপাধি কী?
উত্তর: খলিফা - ভারতে প্রথম খলিফার অনুমোদন লাভ করেন কে?
উত্তর: ইলতুতমিশ - ইলতুতমিশের সার্থক উত্তরাধিকারী কে ছিলেন?
উত্তর: রাজিয়া সুলতানা - বন্দেগান–ই–চিহেলগানি কারা ছিলেন?
উত্তর: ইলতুতমিশের অনুগত দাস সামন্ত - চল্লিশ চক্র তৈরী হয় কার সময়?
উত্তর: ইলতুতমিশ - তুঘলক বংশের প্রতিষ্ঠাতা কে?
উত্তর: গিয়াসউদ্দিন তুঘলক - ‘পাগলা রাজা’ কাকে বলা হয়?
উত্তর: মোহাম্মদ বিন তুঘলক - দেবনগরের নতুন নাম কী?
উত্তর: দৌলতাবাদ - ‘কিতাব–উল–রিহলা’-র রচয়িতা কে?
উত্তর: ইবন বতুতা - খলজি বিপ্লব কবে ঘটেছিল?
উত্তর: ১২৯০ খ্রিস্টাব্দে - পানিপথের প্রথম যুদ্ধ কবে হয়েছিল?
উত্তর: ১৫২৬ খ্রিস্টাব্দে - জাহাঙ্গিরের আমলে কোন শিখ গুরুকে প্রাণদণ্ড দেওয়া হয়?
উত্তর: গুরু অর্জুন - দিল্লি শহর কোন নদীর তীরে গড়ে উঠেছিল?
উত্তর: যমুনা - আলাউদ্দিন খলজির সেনাপতির নাম?
উত্তর: মালিক কাফুর - ভাস্কো–দা–গামা কে ছিলেন?
উত্তর: পর্তুগিজ নাবিক - নিজামউদ্দিন আউলিয়া কে ছিলেন?
উত্তর: সুফি সাধক - হলদিঘাটের যুদ্ধ কাদের মধ্যে?
উত্তর: মহারানা প্রতাপ ও আকবর
28.‘রুমি’ কৌশল কে ব্যবহার করেছিলেন?
উত্তর: ইলতুতমিশ
- মোহাম্মদ ঘুরীর জয় করা অঞ্চল কারা ভাগ করে নিয়েছিল?
উত্তর: সেনাপতিরা
History Question and Answer for Second Unit Test
আরও পড়ুন ‘সারাদিন’ কবিতার প্রশ্নোত্তর তৃতীয় শ্রেণীর বাংলা: Sure Success 2025
নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও (যে-কোনো দুটি):
✅ 1. মোগল আমলে মনসবদারদের বেতন কিভাবে দেওয়া হতো?
উত্তর:
মোগল শাসনকালে মনসবদাররা বেতন হিসেবে সরাসরি নগদ অর্থের পরিবর্তে ‘জাগির’ নামক জমির উপর কর সংগ্রহের অধিকার পেতেন। এই জমি থেকে আদায়কৃত রাজস্ব তাদের বেতনের সমপরিমাণ ধরা হতো। এই ব্যবস্থাকে জাগিরদারি প্রথা বলা হত।
✅ 2. পাট্টা ও কবুলিয়ত কী?
উত্তর:
পাট্টা ছিল এক ধরনের সরকারি নথি, যাতে কৃষকের নামে জমি মাপজোক ও কর নির্ধারণের বিবরণ থাকত।
কবুলিয়ত ছিল কৃষকের স্বাক্ষরিত চুক্তিপত্র, যেখানে নির্দিষ্ট কর প্রদানের অঙ্গীকার উল্লেখ থাকত।
History Question and Answer for Second Unit Test
✅ 3. সুলতান ইলতুতমিশের প্রধান দুটি সমস্যা কী ছিল?
উত্তর:
১. সামন্তদের বিদ্রোহ ও শক্তিশালী স্থানীয় নেতাদের দমন করা।
২. উত্তর-পশ্চিম সীমান্তে মঙ্গোলদের আক্রমণ প্রতিরোধ করা।
✅ 4. বারো ভুঁইয়া, দীন–ই–ইলাহি ও ইকতা ব্যবস্থার সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা দাও।
বারো ভুঁইয়া:
বাংলার দ্বাদশ (১২) জন স্বাধীন জমিদার, যারা মুঘলদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন।
দীন–ই–ইলাহি:
সম্রাট আকবর প্রবর্তিত একটি ধর্মীয় মতবাদ, যা হিন্দু, ইসলাম, জৈন, খ্রিস্টান প্রভৃতি ধর্মের মিলনে গঠিত হয়।
ইকতা ব্যবস্থা:
দিল্লি সুলতানদের সময় রাজস্ব আদায় ও সেনা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রাদেশিক জমি প্রদানভিত্তিক একটি প্রশাসনিক ব্যবস্থা।
✅ 5. সিজদা ও পাইবস কী বোঝায়?
উত্তর:
সিজদা ছিল সুলতানের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শনের প্রতীকস্বরূপ ভূমিতে মাথা ঠেকানো।
পাইবস বলতে সুলতানের পায়ে চুম্বন করে ভক্তি প্রকাশ করাকে বোঝায়।
✅ 6. খলজি বিপ্লব কী?
উত্তর:
১২৯০ খ্রিস্টাব্দে মামলুক শাসকদের পতনের মাধ্যমে খলজি বংশের উত্থান ঘটে। এই পরিবর্তনকেই ইতিহাসে খলজি বিপ্লব বলা হয়।
History Question and Answer for Second Unit Test
✅ 7. দাগ ও হুলিয়া কী?
উত্তর:
দাগ বলতে সৈন্যদের ঘোড়ায় নির্দিষ্ট চিহ্ন কাটাকে বোঝায়, যা পরিচয়ের জন্য ব্যবহৃত হতো।
হুলিয়া ছিল সৈনিকদের শারীরিক বর্ণনার লিখিত নথি, যা নিরাপত্তার কাজে ব্যবহৃত হতো।
✅ 8. হুন্ডি কী?
উত্তর:
হুন্ডি ছিল এক ধরনের আর্থিক দলিল, যা প্রাচীন ভারতে মুদ্রা লেনদেন ও দূরবর্তী আর্থিক আদান-প্রদানের কাজে ব্যবহৃত হতো।
✅ 9. খানুয়া যুদ্ধ ধর্মীয় যুদ্ধ নয় কেন?
উত্তর:
এই যুদ্ধ মূলত আকবর ও মহারানা প্রতাপের মধ্যে রাজনৈতিক আধিপত্য ও ক্ষমতা কুক্ষিগত করার উদ্দেশ্যে হয়েছিল, ধর্মীয় বিভেদের কারণে নয়।
✅ 10. খলিফার অনুমোদন সুলতানদের জন্য কেন জরুরি ছিল?
উত্তর:
খলিফার অনুমোদন পেলে সুলতান তার শাসনের ধর্মীয় বৈধতা পেতেন। এটি তার ক্ষমতা জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য করত।
History Question and Answer for Second Unit Test
✅ 11. শাহজাহানাবাদের নাগরিক বসতির ধরন কেমন ছিল?
উত্তর:
এই পরিকল্পিত শহরে ধনী ও দরিদ্রের জন্য পৃথক আবাসন ছিল। দুর্গ, বাজার, মসজিদ কেন্দ্র করে শহর গড়ে ওঠে, যা সাংগঠনিক ও নান্দনিক ছিল।
✅ 12. মুঘলরা নিজেদের ‘মুঘল‘ বলে ভাবত না কেন?
উত্তর:
যদিও মুঘলরা তুর্কি-মঙ্গোল বংশোদ্ভূত, তবুও তারা ভারতীয় সংস্কৃতির সাথে মিশে গিয়েছিল। তারা নিজেদের স্থানীয় শাসক হিসেবেই ভাবতে শুরু করে।
✅ 13. শাহজাহান দিল্লির পুরনো ধ্বংসাবশেষে রাজধানী গড়লেন না কেন?
উত্তর:
দিল্লি শহর পুর্ববর্তী যুদ্ধবিধ্বস্ত অবস্থায় ছিল, তাই শাহজাহান নতুন পরিকল্পনায় সুন্দর ও শক্তিশালী শহর শাহজাহানাবাদ নির্মাণ করেন।
✅ 14. দিল্লি সুলতানিতে উলেমাদের ভূমিকা সবসময় একই ছিল কি?
উত্তর:
না, উলেমাদের ভূমিকা পরিস্থিতিনির্ভর ছিল। তারা কখনও শাসকের পরামর্শদাতা ছিলেন, আবার কখনও শাসননীতির বিরোধিতাও করেছেন।
History Question and Answer for Second Unit Test
আরও পড়ুন পশ্চিমবঙ্গ বোর্ডের তৃতীয় শ্রেণীর বাংলা অধ্যায় WBBSE Class 3 Bangla – All Chapters
টীকা লেখো
✅ 1. ইকতা ব্যবস্থা কী ছিল?
উত্তর:
দিল্লি সুলতানির সময় রাজস্ব আদায় ও স্থানীয় শাসনব্যবস্থা পরিচালনার জন্য রাজ্যকে একাধিক অংশে ভাগ করা হতো, যাকে ‘ইকতা’ বলা হত। প্রতিটি ইকতার দায়িত্ব থাকত একজন ইকতাদারের হাতে, যিনি ওই অঞ্চল থেকে কর আদায় করতেন এবং সেই অর্থের একটি অংশ সেনা ও প্রশাসনের কাজে ব্যয় করতেন। এই ব্যবস্থা সুলতানির রাজ্য পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করত।
✅ 2. বারো ভূঁইয়া কারা ছিলেন?
উত্তর:
বারো ভূঁইয়া বলতে বাংলার বারোজন প্রভাবশালী জমিদার বা ভূস্বামীকে বোঝায়, যারা দিল্লি সুলতানির শাসন দুর্বল হয়ে পড়ার পর স্বাধীনভাবে শাসন করতেন। তারা নিজেদের এলাকা রক্ষা ও স্বায়ত্তশাসন বজায় রাখতে মুঘল ও অন্যান্য বহিরাগত শক্তির বিরুদ্ধে একত্রে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন। ইশা খান এই গোষ্ঠীর অন্যতম নেতা ছিলেন।
✅ 3. দীন–ই–ইলাহি কী?
উত্তর:
‘দীন-ই-ইলাহি’ ছিল সম্রাট আকবরের প্রবর্তিত একটি নতুন ধর্মীয় মতবাদ, যার উদ্দেশ্য ছিল হিন্দু, মুসলিম, জৈন ও খ্রিস্টানসহ বিভিন্ন ধর্মের ভাবধারার মিলন ঘটিয়ে একটি সার্বজনীন ধর্ম তৈরি করা। এটি ধর্মীয় সহিষ্ণুতার প্রতীক হলেও সাধারণ মানুষের মধ্যে জনপ্রিয়তা পায়নি।
✅ 4. আলাউদ্দিন খলজির বাজার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা সম্পর্কে লিখো।
উত্তর:
আলাউদ্দিন খলজি দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে কঠোর বাজার নিয়ন্ত্রণ প্রথা চালু করেছিলেন। তিনি খাদ্যদ্রব্য, পশু, কাপড় ইত্যাদির নির্দিষ্ট মূল্য নির্ধারণ করে দেন। বাজারে প্রতারণা বা অতিরিক্ত দামের বিরুদ্ধে নজরদারি চালাতে তিনি ‘শাহনা-ই-মণ্ডি’ নামে বিশেষ দপ্তর গঠন করেন। ফলে সেনাবাহিনীর জন্য সুলভে রসদ সরবরাহ নিশ্চিত হয়।
✅ 5. মধ্যযুগে ভারতের অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য কেমন ছিল?
উত্তর:
মধ্যযুগে ভারতীয় উপমহাদেশে স্থল ও নদীপথে বাণিজ্য ব্যাপকভাবে বিস্তার লাভ করে। মসলিন, রেশম, মশলা, লৌহজাত সামগ্রী এবং রত্ন জাতীয় দ্রব্য এক অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে আদান-প্রদান হতো। তৎকালীন মেলা, বন্দর ও শহর ছিল বাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। ব্যবসার মাধ্যমে বিভিন্ন অঞ্চল পরস্পরের সঙ্গে অর্থনৈতিকভাবে যুক্ত ছিল।
✅ 6. আকবরকে মোগল সাম্রাজ্যের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা বলা হয় কেন?
উত্তর:
সম্রাট আকবর কেবল সাম্রাজ্য সম্প্রসারণেই দক্ষ ছিলেন না, বরং তিনি কার্যকর প্রশাসনিক ও রাজস্ব ব্যবস্থা চালু করেন। মনসবদারি প্রথা, দীন-ই-ইলাহি, ধর্মীয় সহিষ্ণুতা এবং কেন্দ্রীভূত শাসনব্যবস্থার মাধ্যমে তিনি একটি স্থায়ী ও সংগঠিত সাম্রাজ্যের ভিত্তি স্থাপন করেন। এইসব কারণেই তাকে মোগল সাম্রাজ্যের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
✅ 7. শাহজাহানাবাদের নাগরিক বসতির বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করো।
উত্তর:
শাহজাহানাবাদ ছিল পরিকল্পিত নগরায়ণের উৎকৃষ্ট উদাহরণ। এখানে রাজপ্রাসাদ, জমজমাট বাজার, মসজিদ ও আবাসন এলাকা নির্দিষ্টভাবে বিন্যস্ত ছিল। ধনী ও দরিদ্র শ্রেণির জন্য আলাদা বাসস্থানের ব্যবস্থা ছিল। শহরটি একটি প্রাচীর দিয়ে ঘেরা ছিল, যার প্রবেশপথগুলো রক্ষিত থাকত। এটি প্রশাসনিক ও সামরিক গুরুত্বে ভরপুর একটি নগরী ছিল।
History Question and Answer for Second Unit Test
✅ 8. ইকতা ব্যবস্থার প্রশাসনিক গুরুত্ব ব্যাখ্যা করো।
উত্তর:
ইকতা ব্যবস্থা ছিল দিল্লি সুলতানির প্রশাসনের ভিত্তি। এর মাধ্যমে সুলতান ইকতাদারদের নির্দিষ্ট অঞ্চলে রাজস্ব আদায়ের ক্ষমতা দিতেন। ইকতাদাররা সেই রাজস্ব ব্যবহার করে সৈন্য রাখতেন ও অঞ্চল শাসন করতেন। এতে কেন্দ্র ও প্রদেশের মধ্যে কার্যকর যোগাযোগ স্থাপিত হতো এবং সামরিক শক্তিও রক্ষিত থাকত।
✅ 9. জাবতি ব্যবস্থা কী?
উত্তর:
জাবতি ছিল মুঘল আমলের একটি সংগঠিত রাজস্ব সংগ্রহ পদ্ধতি। এতে চাষযোগ্য জমির পরিমাণ ও ফসলের গড় উৎপাদনের ভিত্তিতে কর নির্ধারিত হতো। রাজস্ব নির্দিষ্ট হারে ধার্য করে সরকারি কোষাগারে জমা দিতে হতো। টোডরমল এই ব্যবস্থার প্রবর্তক ছিলেন এবং এটি আকবরের আমলে সর্বাধিক প্রচলিত ছিল।
নীচের যেকোনাে একটি প্রশ্নের উত্তর লেখাে (আট-দশটি বাক্যের মধ্যে) :
✅ 1. মুঘল শাসনের সঙ্গে রাজপুতদের সম্পর্ক কীভাবে পরিবর্তিত হয়েছিল?
উত্তর:
মুঘল শাসনের শুরুতে রাজপুতরা একপ্রকার বিদ্রোহী মনোভাব পোষণ করত এবং তারা সামরিকভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। তবে সম্রাট আকবর এই বৈরিতা দূর করতে কৌশলী নীতি গ্রহণ করেন। তিনি রাজপুতদের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করেন এবং রাজপরিবারের সদস্যদের প্রশাসনিক ও সামরিক পদে নিয়োগ দেন। এইভাবে রাজপুতদের সঙ্গে একটি সহযোগিতামূলক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরবর্তীতে এই সম্পর্ক ঔরঙ্গজেবের ধর্মীয় কঠোরতায় পুনরায় খারাপ হতে থাকে। অতএব, রাজপুত-মুঘল সম্পর্কের ধারা ছিল—প্রথমে বিরোধিতা, তারপর সহযোগিতা, পরে পুনরায় দ্বন্দ্ব।
✅ 2. দিল্লি সুলতানি কি কেন্দ্রীভূত শাসনব্যবস্থা ছিল? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর:
হ্যাঁ, দিল্লি সুলতানি ছিল একটি সুগঠিত কেন্দ্রীভূত শাসনব্যবস্থা। সুলতান ছিলেন সর্বোচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন শাসক, যিনি প্রশাসন, বিচার, রাজস্ব ও সামরিক বিভাগের একচ্ছত্র অধিকারী ছিলেন। তার নিযুক্ত ইকতাদাররা শুধু প্রশাসনের সহায়ক হিসেবে কাজ করতেন এবং সরাসরি সুলতানের প্রতি দায়বদ্ধ থাকতেন। স্থানীয় শাসকদের স্বাধীনতা ছিল না; তাদের উপর কেন্দ্রের কড়া নজরদারি ছিল। এইভাবে কেন্দ্রীয় কর্তৃত্বের উপর ভিত্তি করে পরিচালিত এই সুলতানি শাসন একটি সংগঠিত এবং কার্যকর কেন্দ্রীভূত ব্যবস্থা ছিল।
✅ 3. আকবরকে মুঘল সাম্রাজ্যের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা বলা হয় কেন?
উত্তর:
আকবর প্রশাসনিক দক্ষতা, সামরিক জয়যাত্রা, রাজপুত-মিত্রতা এবং ধর্মীয় সহনশীলতার মাধ্যমে মুঘল সাম্রাজ্যকে স্থিতিশীল করে তোলেন। তিনি মনসবদারি প্রথা ও সুব্যবস্থাপিত রাজস্বনীতি প্রবর্তন করেন এবং রাজনৈতিক ঐক্যের ভিত্তি গড়ে তোলেন। ধর্মীয় বিভাজনের বদলে সব সম্প্রদায়কে সমন্বিতভাবে শাসনে যুক্ত করেন। এইসব কৌশলের ফলে তিনি সাম্রাজ্যের ভিত মজবুত করেন এবং তাই তাকে প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা বলা হয়।
History Question and Answer for Second Unit Test
✅ 4. মধ্যযুগে ভারতের অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যের ধরণ কেমন ছিল?
উত্তর:
মধ্যযুগে ভারতে অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য ব্যাপকভাবে বিস্তৃত ছিল। শহর, মফস্বল এবং বন্দর নগরীগুলো বাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ছিল। পণ্য হিসেবে মসলিন, রেশম, মশলা, ধাতব সামগ্রী এবং হস্তশিল্পজাত দ্রব্য ক্রয়-বিক্রয় হতো। বাণিজ্য চলত নদীপথ, পায়ে চলার রাস্তা ও গরুর গাড়ির মাধ্যমে। মেলামেশা, হাট এবং সাপ্তাহিক বাজার ছিল অর্থনৈতিক লেনদেনের প্রধান মাধ্যম।
✅ 5. শেরশাহের সংস্কারের বৈশিষ্ট্য কী ছিল?
উত্তর:
শেরশাহ সূরি প্রশাসনে শৃঙ্খলা আনেন এবং কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার করেন। তিনি গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোড তৈরি করে যোগাযোগ উন্নত করেন। ডাক ব্যবস্থা চালু করে বার্তা প্রেরণ দ্রুত করেন। করব্যবস্থা সংস্কার করে জমির পরিমাপ ও উৎপাদনের ভিত্তিতে কর নির্ধারণ করেন। পাশাপাশি রুপার মুদ্রা ‘রুপি’ চালু করে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা আনেন। তার সংস্কারসমূহ পরবর্তী মুঘল প্রশাসনের ভিত্তি হয়ে ওঠে।
✅ 6. আলাউদ্দিন খলজির বাজার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা সংক্ষেপে ব্যাখ্যা করো।
উত্তর:
আলাউদ্দিন খলজি দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাজার ব্যবস্থায় কড়া নিয়ম চালু করেন। তিনি বিভিন্ন দ্রব্যের নির্ধারিত মূল্য নির্ধারণ করে দেন এবং বাজার তদারকির জন্য ‘শাহনা-ই-মণ্ডি’ নামক দপ্তর স্থাপন করেন। ফলে সৈন্য ও সাধারণ মানুষ ন্যায্য দামে দ্রব্য কিনতে পারত এবং মজুতদারি ও কারসাজি ঠেকানো সম্ভব হয়।
✅ 7. সুলতানি আমলে দিল্লির জল সংরক্ষণ ও সরবরাহ ব্যবস্থা কেমন ছিল?
উত্তর:
সুলতানি আমলে দিল্লিতে জনসাধারণ ও রাজপ্রাসাদের জন্য উন্নত জলব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়। শহরের বিভিন্ন স্থানে বড় পুকুর, কূপ এবং জলাধার তৈরি করা হয়। খাল কেটে নদীর জল শহরে আনা হতো। রাজপথ ও বসতির পাশে পানযোগ্য জলের ব্যবস্থাও ছিল। এই ব্যবস্থাগুলো শহরের জনস্বাস্থ্য ও কৃষিকাজে সহায়ক ভূমিকা পালন করত।
আরও পড়ুন তৃতীয় শ্রেণী বাংলা অধ্যায় ২ “আমরা চাষ করি আনন্দে”
WIKIPEDIA LINK পশ্চিমবঙ্গ_মধ্য_শিক্ষা_পর্ষদ