পঞ্চম শ্রেণী
আমাদের পরিবেশ প্রথম অধ্যায়
মানবদেহ
WB Class 5 Amader Poribesh Chapter 1 জলবাহিত ও বায়ুবাহিত রোগ, ORS তৈরির পদ্ধতি, বিসিজি টিকা এবং স্টেথোস্কোপের ইতিহাস সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন। সহজ ভাষায় গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য শিক্ষা ও প্রশ্নোত্তরের সমাহার।
শরীরের বর্ম
১) বর্ম বলতে কী বোঝায়?
উত্তর:প্রাচীন যোদ্ধারা যুদ্ধের সময় নিজেদের রক্ষা করতে মোটা চামড়ার তৈরি বিশেষ পোশাক পরত। এই সুরক্ষামূলক পোশাককে বর্ম বলে।
২) শরীরের বর্ম কাকে বলা হয়?
উত্তর:আমাদের ত্বক বা চামড়া হলো শরীরের প্রাকৃতিক বর্ম। এটি আমাদের দেহকে রক্ষা করে।
৩) ত্বককে শরীরের বর্ম বলা হয় কেন?
উত্তর:ত্বক বা চামড়া দেহকে আঘাত, ধুলা, রোগজীবাণু এবং সূর্যের ক্ষতিকর অতিবেগুনী রশ্মি থেকে রক্ষা করে। তাই একে “শরীরের বর্ম” বলা হয়।
৪) ত্বকের নিচে কী কী অঙ্গ থাকে?
উত্তর:ত্বকের নিচে থাকে—
- শিরা (Veins),
- ধমনি (Arteries),
- মাংসপেশি (Muscles)।
৫) শিরা ও ধমনি দেখতে কেমন?
উত্তর:এগুলো দেখতে চিকন নলের মতো।
৬) কোন প্রাণীর ত্বক সবচেয়ে মোটা?
উত্তর:গণ্ডার (Rhino)-এর চামড়া খুবই মোটা হয়।
৭) গণ্ডারের চামড়া দিয়ে আগে কী তৈরি হত?
উত্তর:আগেকার দিনে যোদ্ধাদের যুদ্ধের পোশাক ও ঢাল তৈরি হত গণ্ডারের চামড়া দিয়ে।
৮) চামড়ার নিচে যে ফুলে থাকা অংশটি দেখা যায়, তাকে কী বলে?
উত্তর:এটি হলো শিরা।
৯) যদি শিরা, ধমনি বা মাংসপেশি না থাকত, তবে কী হত?
উত্তর:সামান্য আঘাতেই আমাদের শরীর থেকে অনেক রক্ত বের হয়ে যেত।
১০) চামড়া দিয়ে কী কী জিনিস তৈরি হয়?
উত্তর:
- ব্যাগ,
- জুতো,
- বেল্ট,
- মানিব্যাগ ইত্যাদি।
১১) ত্বকের কাজ কী?
উত্তর:
1.চামড়া দেহকে বাইরের আঘাত থেকে রক্ষা করে।
- সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মির হাত থেকে বাঁচায়।
3. জীবাণু যেন শরীরে না ঢোকে, সেটাও ঠেকায়।
১২) চামড়ার ব্যবহার (পুরনো ও নতুন) কী কী?
উত্তর:📝 আগে:
- মানুষ শুকনো চামড়ায় লিখত।
- যোদ্ধাদের বর্ম ও ঢাল তৈরি করত।
👟 এখন:
- পোশাক, জুতো, ব্যাগ, বেল্ট ইত্যাদি তৈরি হয়।
১৩) বর্তমানে চামড়ার ব্যবহার কমানো হচ্ছে কেন?
উত্তর:
1.পরিবেশ দূষণ হয়।
2. চামড়া কারখানার বর্জ্য জল ও বায়ু দূষণ ঘটায়।
3.পশু হত্যাও বেড়ে যায়।
WB Class 5 Amader Poribesh Chapter 1
📍 ত্বক কোথায় পাতলা, কোথায় পুরু
১) শরীরের কোন জায়গায় শিরাগুলো দেখা যায়?
✅ উত্তর:যেসব জায়গায় ত্বক পাতলা, যেমন হাত বা পায়ের উপরের দিকে, সেখানেই শিরা সহজে দেখা যায়।
২) পায়ের তলার চামড়া কেমন হয়?
✅ উত্তর:পায়ের তলার ত্বক অনেক মোটা বা পুরু হয়, কারণ এই অংশে দেহের ভার বেশি পড়ে।
৩) শরীরের সব ভার কোথায় পড়ে?
✅ উত্তর:আমাদের গোড়ালির ওপর দেহের সব ভার পড়ে।
৪) হাতের কোন অংশে বেশি ঘষাঘষি হয়?
✅ উত্তর:হাতের তালু বা চেটোতে বেশি ঘষাঘষি হয়, কারণ আমরা এই অংশ দিয়ে জিনিস ধরি।
৫) হাতের তালুতে শিরা দেখা যায় না কেন?
✅ উত্তর:কারণ তালুর ত্বক অনেক পুরু, তাই ভেতরের শিরাগুলো বাইরে থেকে দেখা যায় না।
৬) ত্বক পুরু না পাতলা কীভাবে বোঝা যায়?
✅ উত্তর:দুই আঙুল দিয়ে চামড়া চেপে ধরলে বোঝা যায় ত্বক পাতলা না পুরু।
৭) যে জায়গায় বেশি ঘষা লাগে, সেখানে ত্বক কেমন হয়?
✅ উত্তর:সেই জায়গার ত্বক পুরু বা মোটা হয়ে যায়।
৮) শরীরের কিছু অংশে ত্বক মোটা, আর কিছু অংশে পাতলা কেন?
✅ উত্তর:যেসব জায়গা বেশি ব্যবহৃত হয় বা ঘষা লাগে (যেমন: তালু, গোড়ালি), সেখানে ত্বক নিজে থেকেই পুরু হয়ে যায় যেন সুরক্ষা পাওয়া যায়।
ত্বকের উপর ও নিচ
১) ত্বকের কয়টি স্তর থাকে?
✅ উত্তর:ত্বকের দুটি স্তর রয়েছে —
- উপরের স্তর (epidermis)
- ভিতরের স্তর (dermis)
২) ভিতরের স্তরে আঘাত লাগলে কী হয়?
✅ উত্তর:জ্বালা বা ব্যথা অনুভূত হয়।
৩) ত্বক পুড়ে গেলে প্রথমে কী করতে হয়?
✅ উত্তর:জ্বলন্ত জায়গায় ঠান্ডা জল দিতে হয়, যাতে ব্যথা কমে এবং ভেতরের স্তর নষ্ট না হয়।
৪) বেশি পুড়ে গেলে কী করা উচিত?
✅ উত্তর:হাসপাতালে যেতে হবে।
৫) ফোসকা কীভাবে পড়ে?
✅ উত্তর:ত্বক পুড়ে গেলে উপরের স্তর মরে যায়, আর ভেতরের স্তর থেকে জল বের হয়ে স্তরের মাঝে জমে যায়, ফলে ফোসকা পড়ে।
৬) ফোসকা পড়লে কী করতে হবে?
✅ উত্তর:ফোসকা পড়া স্থানে বরফ বা ঠান্ডা জিনিস লাগাতে হবে।
৭) ফোসকা হলেও ত্বক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় না কেন?
✅ উত্তর:কারণ ত্বকের ভিতরের স্তর বেঁচে যায়।
৮) ত্বকের উপরের স্তরে কী থাকে না?
✅ উত্তর:রক্ত থাকে না। রক্ত থাকে নিচের স্তরে।
WB Class 5 Amader Poribesh Chapter 1
কোঁকড়ানো আর কালো
১) চামড়া কখন বাড়ে?
✅ উত্তর:যখন বয়স বাড়ে এবং শরীর বেড়ে ওঠে, তখন চামড়াও প্রসারিত হয়।
২) বয়স হলে চামড়া কুঁচকে যায় কেন?
✅ উত্তর:বৃদ্ধ বয়সে শরীরের আকার ছোট হতে থাকে, কিন্তু আগের মতো চামড়া আর ছোট হয় না। ফলে তা কুঁচকে যায়।
৩) কোন রঞ্জকের জন্য চামড়ার রং কালো হয়?
✅ উত্তর:মেলানিন নামক রঞ্জকের জন্য ত্বক কালো হয়।
৪) শরীরে মেলানিন তৈরিতে কী সাহায্য করে?
✅ উত্তর:সূর্যের আলো বা রোদ।
৫) রোদ লাগলে কোন ভিটামিন তৈরি হয়?
✅ উত্তর:ভিটামিন D, যা হাড় শক্ত করে এবং রিকেট রোগ প্রতিরোধ করে।
৬) মেলানিন কীভাবে উপকার করে?
✅ উত্তর:মেলানিন অতিবেগুনী রশ্মি শোষণ করে, ফলে ত্বকের ক্যানসার রোধ করে।
৭) সাহেবদের গায়ের রং ফর্সা কেন হয়?
✅ উত্তর:তাদের চামড়ায় মেলানিন কম থাকে, তাই গায়ের রং ফর্সা।
৮) কালো চামড়ার কিছু জায়গা হঠাৎ সাদা হয়ে যায় কেন?
✅ উত্তর:যেসব জায়গায় মেলানিন তৈরি হয় না, যেমন অপুষ্টি বা অসুখের কারণে, সেসব জায়গা সাদা হয়ে যায়।
৯) কোন ধরনের চামড়া রোগ প্রতিরোধে বেশি শক্তিশালী?
✅ উত্তর:কালো চামড়া, কারণ এতে মেলানিন বেশি থাকে।
১০) গায়ে রোদ লাগানো উপকারী কেন?
✅ উত্তর:1.ত্বকে মেলানিন তৈরি হয় → ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে।
2.ভিটামিন D তৈরি হয় → রিকেট রোগ থেকে বাঁচায়।
১১) শরীর থেকে নুন কীভাবে বের হয়?
✅ উত্তর:ঘামের মাধ্যমে।
১২) ঘামে কী কী থাকে?
✅ উত্তর:নুন এবং শরীরের কিছু বর্জ্য পদার্থ।
১৩) অতিরিক্ত ঘামে নুনজল খেতে বলা হয় কেন?
✅ উত্তর:ঘামের সঙ্গে জল ও নুন বেরিয়ে গেলে শরীর দুর্বল হয়, মাথা ঘোরে, রক্তচাপ বাড়ে। তাই নুনজল খাওয়া দরকার।
১৪) ঘামের উপকারিতা কী?
✅ উত্তর:
1.ঘামে বর্জ্য পদার্থ বেরিয়ে যায় → শরীর রোগমুক্ত থাকে।
2.ঘাম শরীর ঠান্ডা করে।
১৫) ঘামের অসুবিধা কী?
✅ উত্তর:
অতিরিক্ত ঘামে জল ও নুন বেরিয়ে যায় →
➡️ মাথা ঘোরা
➡️ অজ্ঞান হওয়া
➡️ রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া
১৬) কালো চামড়ার অধিকার নিয়ে সংগ্রাম করেছেন এমন দুইজন:
✅ উত্তর: মহাত্মা গান্ধি, নেলসন ম্যান্ডেলা
WB Class 5 Amader Poribesh Chapter 1
🧠 চুলের সাতকাহন
১. চুল, লোম ও পালক কোথায় তৈরি হয়?
উত্তর: এদের গোড়া থাকে ত্বকের নিচের স্তর বা ডারমিস-এ। এখান থেকেই নতুন চুল, লোম ও পালকের জন্ম হয়।
২. আমাদের চামড়াকে প্রথম ধাক্কা থেকে কে রক্ষা করে?
উত্তর: চামড়ার উপর থাকা চুল, লোম, পালক ও আঁশ আমাদের ত্বককে বাইরের আঘাত থেকে সুরক্ষা দেয়।
৩. কোন কোন প্রাণীর গায়ে প্রচুর লোম থাকে?
উত্তর: গোরু, ছাগল ও ভেড়া — এদের গায়ে প্রচুর লোম থাকে, যা শীত থেকে রক্ষা করে।
৪. এমন দুটি প্রাণীর নাম বলো যাদের দেহ আঁশ দিয়ে ঢাকা:
উত্তর: মাছ ও সাপ। এদের চামড়ায় আঁশ থাকে যা শরীরকে রক্ষা করে ও চলাচলে সাহায্য করে।
৫. বয়স বাড়লে মানুষের চুল সাদা হয়ে যায় কেন?
উত্তর: চুলের রং নির্ভর করে মেলানিন নামক রঞ্জকের ওপর। বয়স বাড়লে মেলানিনের উৎপাদন কমে যায়, ফলে চুল সাদা হয়ে যায়।
৬. প্রতিদিন কিছু চুল, পালক, বা লোম উঠে গেলেও কেন সব শেষ হয়ে যায় না?
উত্তর: কারণ আমাদের চামড়া নতুন করে চুল, লোম ও পালক গঠন করে। তাই এগুলো প্রাকৃতিকভাবে ঝরে পড়লেও সম্পূর্ণ ফুরিয়ে যায় না।
🦔 শজারুর কাঁটা
১. কোন প্রাণীর গায়ে শক্ত খাড়া লোম থাকে?
উত্তর: শজারু। এর লোমগুলো দেখতে কাঁটার মতো।
২. শজারুর লোম কেমন?
উত্তর: এর লোম হয় শক্ত, সূচালো, ও খাড়া — যা আত্মরক্ষার কাজ করে।
৩. গণ্ডারের খড়গ আসলে কী দিয়ে তৈরি?
উত্তর: অনেক চুল জমে শক্ত হয়ে গণ্ডারের নাকের উপর খড়গ তৈরি করে। এটি আসলে চুলের গঠনজাত বস্তু।
৪. কাকাতুয়ার মাথায় কী থাকে?
উত্তর: ঝুঁটি, যা দেখতে উঁচু ও পাখার মতো।
৫. কাকাতুয়ার ঝুঁটি আসলে কী?
উত্তর: এটি জমাট বাঁধা পালক, যা ভিন্ন রঙ ও আকৃতিতে দেখা যায়।
৬. মানুষ ছাড়া আর কোন প্রাণীদের দাঁড়ি বা গোঁফ থাকে?
উত্তর:
- ছাগল – দাঁড়ি থাকে।
- বিড়াল – গোঁফ থাকে যা স্পর্শ অনুভব করতে সাহায্য করে।
৭. এমন একটি প্রাণী যার ডানাও আছে, উড়তেও পারে, কিন্তু পাখি নয়:
উত্তর: বাদুড়। এটি একমাত্র উড়তে সক্ষম স্তন্যপায়ী প্রাণী।
৮. কোন স্তন্যপায়ী প্রাণী উড়তে পারে?
উত্তর: বাদুড় — এদের ডানাগুলি চামড়ার পর্দা দিয়ে তৈরি, যা ওড়ার সময় প্রসারিত হয়।
WB Class 5 Amader Poribesh Chapter 1
🧠 নখের নিচে রক্ত
✅ ১. আঙুলকে আঘাত থেকে রক্ষা করে কে?
উত্তর: নখ আমাদের আঙুলকে বাহ্যিক আঘাত, চাপ বা ঘর্ষণ থেকে সুরক্ষা দেয়।
✅ ২. নখ গোলাপি রঙের হয় কেন?
উত্তর: কারণ নখের নিচে থাকে রক্তবাহী শিরা, যেগুলো নখকে গোলাপি রঙের করে তোলে।
✅ ৩. ডাক্তাররা রোগীর নখ দেখেন কেন?
উত্তর: নখের রঙ বা গঠন দেখে রক্তাল্পতা বা অন্যান্য স্বাস্থ্যের সমস্যা বোঝা যায়।
✅ ৪. রক্তাল্পতা হলে নখে কী পরিবর্তন আসে?
উত্তর:
- নখ ফেটে যায়
- মাঝখানে চামচের মতো গর্ত হয়
- রঙ ফ্যাকাসে হয়ে যায়
✅ ৫. নখে ময়লা জমলে কী হয়?
উত্তর:
- নখের গোড়া ইনফেকশনে পেকে যায়
- পুঁজ হতে পারে
- জীবাণু সংক্রমণ ঘটতে পারে
✅ ৬. নতুন নখ গজাতে কত সময় লাগে?
উত্তর: গড়ে প্রায় ২ মাস লাগে।
✅ ৭. নখ কাটলে ব্যথা লাগে না কেন?
উত্তর: নখের উপরের অংশ মরা কোষ দিয়ে তৈরি, তাই কাটলে ব্যথা লাগে না।
✅ ৮. নখ দিয়ে কী কী কাজ করা যায়?
উত্তর:
- ছোট জিনিস তুলতে
- মাটি বা কাঁটা খুঁচিয়ে তুলতে
- আঙুলকে রক্ষা করতে
নরম নরম থাবার নিচে লুকানো তার নখ
WB Class 5 Amader Poribesh Chapter 1
✅ ১. বিড়ালের নখ দেখা যায় না কেন?
উত্তর: বিড়ালের নখ থাবার নিচে লুকানো থাকে এবং প্রয়োজনে বের হয়।
✅ ২. কখন বিড়ালের নখ দেখা যায়?
উত্তর: শিকার করার সময় বা কিছু আঁকড়ে ধরলে।
✅ ৩. কুকুরের নখ কেমন?
উত্তর: ধারালো, তবে সাধারণত বাইরে দৃশ্যমান।
✅ ৪. ধারালো নখযুক্ত প্রাণীর উদাহরণ:
- কুকুর
- বিড়াল
- বাঘ
- সিংহ
✅ ৫. গরু ও ছাগলের নখ কী?
উত্তর: ওদের খুরই মূলত নখ।
✅ ৬. শিকারি পাখির নখের বৈশিষ্ট্য:
উত্তর: হুকের মতো বাঁকা ও সূঁচালো (যেমন: ঈগল, প্যাঁচা)। শিকার ধরে উড়ে যেতে সাহায্য করে।
✅ ৭. পশুপাখিদের নখ বড় হয় না কেন?
উত্তর: ওরা নখ কাটে না, বরং মাটিতে ঘষে ফেলে দেয়।
✅ ৮. বেশিরভাগ পাখির নখ শক্ত ও ধারালো কেন?
উত্তর: শিকার ধরা, ডাল আঁকড়ে ধরা এবং ভার বহনের জন্য।
✅ ৯. নখহীন প্রাণী:
- মাছ
- সাপ
✅ ১০. কিভাবে যত্ন নিতে হয়?
- ত্বক ও নখ নিয়মিত সাবান দিয়ে পরিষ্কার করুন
- চুলে শ্যাম্পু ও তেল ব্যবহার করুন
- ত্বকে প্রয়োজনে ক্রিম বা ময়েশ্চারাইজার লাগান
✅ ১১. যত্ন না নিলে কী হতে পারে?
- নখে নখকুনি বা ইনফেকশন
- চামড়ায় চুলকানি, ফুসকুড়ি
- চুলে খুসকি ও উকুন
WB Class 5 Amader Poribesh Chapter 1
🦴 ছোট বড় হাড়ের কথা
✅ ১. কোনো প্রাণীর দেহে কতটি হাড় আছে তা কিভাবে বোঝা যায়?
উত্তর: কঙ্কাল বিশ্লেষণ করে বোঝা যায়।
✅ ২. কনুই থেকে কাঁধ পর্যন্ত হাড় কেমন দেখতে?
উত্তর: গোলাকার নলের মতো।
✅ ৩. কবজি থেকে কনুই পর্যন্ত কয়টি হাড় থাকে?
উত্তর: দুটি।
✅ ৪. হাতের আঙুলে কয়টি হাড় থাকে?
উত্তর:
- বুড়ো আঙুলে ২টি
- অন্যান্য আঙুলে ৪টি করে
✅ ৫. মানুষের সবচেয়ে ছোট ও বড় হাড় কোনটি?
উত্তর:
- সবচেয়ে ছোট: স্টেপিস (কানের ভিতরে)
- সবচেয়ে বড়: ফিমার (উরু বা জাং)
✅ ৬. অস্থিসন্ধি কাকে বলে?
উত্তর: হাড় (অস্থি) ও জোড় (সন্ধি) – এই দুইয়ের মিলনস্থলকে অস্থিসন্ধি বলা হয়।
✅ ৭. অস্থিসন্ধি না থাকলে কী হতো?
উত্তর: হাত-পা সহজে নাড়ানো যেত না; চলাফেরা ও কাজকর্ম ব্যাহত হতো।
✅ ৮. শরীরের সব হাড়কে একসাথে কী বলা হয়?
উত্তর: নরকঙ্কাল বা Skeleton।
✅ ৯. কাঁধ থেকে কনুই পর্যন্ত হাড়ের নাম কী?
উত্তর: হিউমেরাস।
✅ ১০. কনুই থেকে কবজি পর্যন্ত দুটি হাড়ের নাম কী?
উত্তর:
- বুড়ো আঙুলের পাশে: আলনা (Ulna)
- কড়ে আঙুলের পাশে: রেডিয়াস (Radius)
✅ ১১. কোমর থেকে হাঁটু পর্যন্ত হাড়ের নাম কী?
উত্তর: ফিমার (Femur)
✅ ১২. হাঁটু থেকে গোড়ালি পর্যন্ত দুটি হাড়ের নাম কী?
উত্তর: টিবিয়া (Tibia) ও ফিবুলা (Fibula)
✅ ১৩. মেরুদণ্ডের হাড়কে কী বলা হয়?
উত্তর: কশেরুকা বা ভার্টিব্রা (Vertebra)
✅ ১৪. লিগামেন্ট (Ligament) কী?
উত্তর: হাড়ের সন্ধিতে থাকা দড়ির মতো শক্ত বস্তু যা হাড়কে সংযুক্ত রাখে।
✅ ১৫. মানুষের সবচেয়ে শক্ত হাড় কোনটি?
উত্তর: চোয়ালের হাড় (Jawbone)
✅ ১৬. সাইনোভিয়াল তরল কী?
উত্তর: অস্থিসন্ধির মধ্যে থাকা পিচ্ছিল তরল যা হাড়ের নড়াচড়াকে সহজ করে।
✅ ১৭. অস্থিসন্ধি নমনীয় রাখতে কী করতে হয়?
উত্তর: জিমনাস্টিক বা শারীরিক ব্যায়াম করতে হয়।
✅ ১৮. অস্থি মজবুত রাখতে আমাদের কী প্রয়োজন?
উত্তর: ক্যালসিয়াম দরকার।
✅ ১৯. ক্যালসিয়াম কোথা থেকে পাওয়া যায়?
উত্তর:
- দুধ
- ডিম
- দই
- পনির
✅ ২০. হাড় ভালো রাখতে কী করা দরকার?
উত্তর:
- ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া
- নিয়মিত যোগব্যায়াম ও জিমনাস্টিক করা
- রোদে দাঁড়িয়ে ভিটামিন D গ্রহণ করা
📌 সংক্ষেপে মনে রাখার মতো কিছু তথ্য:
| বিষয় | তথ্য |
| সবচেয়ে ছোট হাড় | স্টেপিস (কানে) |
| সবচেয়ে বড় হাড় | ফিমার (উরুতে) |
| সবচেয়ে শক্ত হাড় | চোয়ালের হাড় |
| কবজি থেকে কনুই | আলনা ও রেডিয়াস |
| হাঁটু থেকে গোড়ালি | টিবিয়া ও ফিবুলা |
| মেরুদণ্ডের হাড় | কশেরুকা বা ভার্টিব্রা |
| হাড় সংযোগকারী | লিগামেন্ট |
| নমনীয় রাখতে | ব্যায়াম ও জিমনাস্টিক |
| মজবুত হাড়ের জন্য | ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন D |
পেশি নিয়ে কিছু কথা
WB Class 5 Amader Poribesh Chapter 1
✅ ১. পেশি কাকে বলে?
উত্তর: হাড়ের উপর এবং চামড়ার নিচে যে মাংসল টিস্যু থাকে তাকেই পেশি বলা হয়।
✅ ২. জিভের পেশি কী কাজ করে?
উত্তর: স্বাদ গ্রহণ, কথা বলা, খাবার চিবিয়ে গিলে ফেলা এবং মুখে খাবার ওলটপালট করায় সহায়তা করে।
✅ ৩. দুটি অঙ্গ যেখানে হাড় নেই, পুরোটা পেশি:
- চোখ
- জিভ
✅ ৪. চোখের পেশির কাজ কী?
উত্তর: আমাদের চারপাশে দেখা এবং পড়তে সহায়তা করে।
✅ ৫. হাতের পেশির কাজ কী?
উত্তর: কোনো কিছু ধরা, লেখা এবং টেনে তোলার কাজে সাহায্য করে।
✅ ৬. হাতের দুটি পেশির নাম:
- বাইসেপস (Biceps)
- ট্রাইসেপস (Triceps)
✅ ৭. পাখিদের সবচেয়ে শক্তিশালী পেশি কোনটি?
উত্তর: ডানার পেশি।
✅ ৮. মুখের পেশির জোর বেশি এমন দুটি প্রাণী:
- বাঘ
- সিংহ
✅ ৯. কোন প্রাণীর শরীরের বেশিরভাগ অংশই পেশি?
উত্তর: কেঁচো।
✅ ১০. শরীরের এমন একটি পেশি যা কোনো কাজ করে না:
উত্তর: কানের লতির পেশি।
✅ ১১. পেশি কীভাবে লম্বায় বাড়ে?
উত্তর: ব্যায়াম ও হাত-পা টানটান করে ছেড়ে দিলে।
✅ ১২. কী করলে পেশি জোরালো ও মজবুত হয়?
উত্তর:
- প্রোটিনযুক্ত খাবার (মাছ, মাংস, ডিম, ডাল, সয়াবিন, ফলমূল)
- নিয়মিত ব্যায়াম
- শরীরচর্চা
✅ ১৩. স্টেথোস্কোপের বুকে লাগানো অংশ দেখতে কেমন?
উত্তর: ফানেলের মতো।
✅ ১৪. ডাক্তাররা স্টেথোস্কোপ দিয়ে কী শোনেন?
উত্তর: হৃদ্পিণ্ডের শব্দ।
✅ ১৫. কখন হৃদয়ের ধুকপুক শব্দ বেড়ে যায়?
উত্তর: দৌড়ানোর সময় বা পরিশ্রমের ফলে।
✅ ১৬. রক্ত সারা দেহে পাঠায় কোন অঙ্গ?
উত্তর: হৃদ্পিণ্ড।
✅ ১৭. হৃদ্পিণ্ড থেকে রক্ত কীভাবে ছড়ায়?
উত্তর: ধমনি (Artery) দিয়ে

✅ ১৮. হৃদ্পিণ্ড কী?
উত্তর: এটি একটি পাম্পের মতো অঙ্গ, যা রক্ত সারা শরীরে পাঠায়।
✅ ১৯. শরীরে রক্ত ছড়িয়ে পড়া কেন দরকার?
উত্তর:
- রক্ত শরীরের প্রতিটি কোষে অক্সিজেন ও পুষ্টি পৌঁছে দেয়
- CO₂ ও বর্জ্য পদার্থ বের করে দেয়
বাতাসে ওড়ে জীবাণু
WB Class 5 Amader Poribesh Chapter 1
✅ ২০. বাতাসে থাকা সবচেয়ে বিপজ্জনক জীবাণু কোনটি?
উত্তর: যক্ষ্মার জীবাণু।
✅ ২১. যক্ষ্মা কিভাবে ছড়ায়?
উত্তর: কাশি, হাঁচি, থুতু, এমনকি সামনে কথা বললেও।
✅ ২২. যক্ষ্মা কোন অঙ্গে সবচেয়ে বেশি হয়?
উত্তর: ফুসফুসে।
✅ ২৩. যক্ষ্মার জীবাণু কবে আবিষ্কৃত হয়?
উত্তর: প্রায় ১৩০ বছর আগে।
✅ ২৪. যক্ষ্মার জীবাণুর নাম কী?
উত্তর: Mycobacterium tuberculosis
✅ ২৫. যক্ষ্মার একমাত্র কার্যকর চিকিৎসা কী?
উত্তর: DOT (Directly Observed Treatment)
✅ ২৬. DOT কীভাবে কাজ করে?
উত্তর: রোগীকে নিয়মিত ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ ও পর্যবেক্ষণ করা হয়।
✅ ২৭. আগে যক্ষ্মার ভালো চিকিৎসা কেন ছিল না?
উত্তর: উপযুক্ত ওষুধ আবিষ্কারে অনেক গবেষণা ও সময় লেগেছে।
✅ ২৮. যক্ষ্মা সারতে কতদিন লাগে?
উত্তর: DOT চিকিৎসায় প্রায় এক বছর সময় লাগে।
✅ ২৯. যক্ষ্মার উপসর্গ কী কী?
উত্তর:
- বিকেলে জ্বর
- রাতে ঘাম
- কাশি ও শ্বাসকষ্ট
- কফে রক্ত
- খিদে না পাওয়া, ওজন কমে যাওয়া
✅ ৩০. বাতাসে ছড়ায় এমন রোগের নাম:
- যক্ষ্মা
- ইনফ্লুয়েঞ্জা
- সাধারণ সর্দি-কাশি
✅ ৩১. হাঁচি–কাশির সময় রুমাল চাপা দেওয়া কেন জরুরি?
উত্তর: যাতে জীবাণু বাতাসে না ছড়িয়ে পড়ে এবং অন্যদের সংক্রমিত না করে।
জলের সঙ্গে জীবাণু এবং স্টেথোস্কোপের ইতিহাস
WB Class 5 Amader Poribesh Chapter 1
১. জলবাহিত ও বায়ুবাহিত রোগের উদাহরণ কি কি?
- জলবাহিত রোগ: কলেরা, টাইফয়েড, ডায়রিয়া, জন্ডিস
- বায়ুবাহিত রোগ: যক্ষ্মা, নিউমোনিয়া, ইনফ্লুয়েঞ্জা
২. যক্ষ্মা রোগের বিরুদ্ধে কোন টিকা দেওয়া হয়?
উত্তর: বিসিজি টিকা (BCG Vaccine)
৩. বিসিজি টিকার পূর্ণরূপ কী?
উত্তর: Bacillus Calmette Guérin
৪. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ার কারণ কী?
- খাওয়া-দাওয়া ঠিকমতো না হওয়া
- অতিরিক্ত পরিশ্রম
- ধুলো-ধোঁয়াজনিত পরিবেশে থাকা
৫. কলেরা রোগের লক্ষণ কী কী?
- চাল ধোয়া জলের মতো পাতলা এবং দুর্গন্ধযুক্ত পায়খানা
- প্রচুর বমি বমি ভাব
৬. কলেরা বা প্রচুর ডায়রিয়া হলে কোথায় নেওয়া উচিত?
উত্তর: দ্রুত হাসপাতালে।
৭. কলেরা বা ডায়রিয়ার কারণ কী?
উত্তর: দূষিত জল পান করা অথবা চিকিৎসা সময়মতো না নেয়া।
৮. ORS কী?
উত্তর: ORS (Oral Rehydration Solution) হলো জল এবং ইলেকট্রোলাইটের ঘাটতি পূরণকারী দ্রবণ।
৯. কোন রোগগুলোতে ORS খেতে বলা হয়?
উত্তর: ডায়রিয়া, কলেরা ইত্যাদি।
১০. ORS এর পূর্ণরূপ কী?
উত্তর: Oral Rehydration Solution
১১. ORS কিভাবে তৈরি করবেন?
- এক গ্লাস পানি ২০ মিনিট ফুটিয়ে ঠাণ্ডা করুন
- তাতে ১ চা চামচ চিনি ও এক চিমটি লবণ ভালো করে মিশিয়ে নিন
🩺 স্টেথোস্কোপ: ইতিহাস ও ব্যবহার

১. স্টেথোস্কোপ কে এবং কত বছর আগে আবিস্কার করেন?
উত্তর: বিজ্ঞানী রেনে লিনেক (René Laennec) ২০০ বছর আগে।
২. স্টেথোস্কোপ দিয়ে কী শোনা যায়?
উত্তর: হৃদ্পিণ্ডের ধুকপুক ও ফুসফুসের শব্দ।
৩. রেনে লিনেক মূলত কী নিয়ে গবেষণা করতেন?
উত্তর: ফুসফুসের রোগ ও স্বাস্থ্য।
৪. প্রথম স্টেথোস্কোপ কী দিয়ে তৈরি হয়েছিল?
উত্তর: কাঠ দিয়ে।
৫. রেনে লিনেক প্রথম কাকে দিয়ে স্টেথোস্কোপ বানিয়েছিলেন?
উত্তর: ছুতোর (কাগজের) মাধ্যমে।
৬. লিনেক কিভাবে প্রথম স্টেথোস্কোপ তৈরি করেছিলেন?
উত্তর: লম্বা মোটা কাগজকে গোল করে আঠা দিয়ে জুড়ে সরু নল বানিয়ে।
৭. প্রথম কাগজের স্টেথোস্কোপের সমস্যা কী ছিল?
- বুকের ধুকপুকের আওয়াজ ভালোভাবে শোনা যেত না
- নলটি দ্রুত নষ্ট হয়ে যেত
আরও পড়ুন চতুর্থ শ্রেণীর পরিবেশ ও বিজ্ঞান বিষয়ের অধ্যায়সমুহ Class 4 Environmental Studies All Chapters
আরও পড়ুন “তৃতীয় শ্রেণির পরিবেশ অধ্যায় ৩ : গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর | পরীক্ষা প্রস্তুতির সহায়তা”
আরও পড়ুন “WB Class 4 Science Chapter 1 for success : পরিবেশের উপাদান ও জীবজগৎ প্রশ্ন ও উত্তর”
আরও পড়ুন চতুর্থ শ্রেণী বিজ্ঞান: দ্বিতীয় অধ্যায় পরিবেশের উপাদান – জড়বস্তুর জগৎ প্রশ্ন ও উত্তর
আরও পড়ুন চতুর্থ শ্রেণী তৃতীয় অধ্যায়: শরীর – গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর (বাংলা নোট)”
WIKIPEDIA LINK পশ্চিমবঙ্গ_মধ্য_শিক্ষা_পর্ষদ


